দাঁতের চিকিৎসায় পারদ অ্যামালগাম: স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ভয়াবহ ঝুঁকি
- প্রকাশিত ১০:১৪ রাত জুলাই ৩০, ২০১৯
“স্বাস্থ্য ও পরিবেশে ক্ষতিকর পারদ অ্যামালগামের প্রভাব”শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা
দাঁতে পারদ অ্যামালগাম বা সিলভার ফিলিং হলো দাঁত ক্ষয়ে গেলে তা ভরাট করতে এক বিশেষ চিকিৎসা পদ্ধতি যা মানুষের স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ব্যাপক ঝুঁকি তৈরি করে
স্বাস্থ্য ও পরিবেশে ভয়াবহ ঝুঁকির কারণে দাঁতের চিকিৎসায় পারদ অ্যামালগাম ব্যবহার নিষিদ্ধ করা জরুরি বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। পরিবেশ অধিদপ্তর ও এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন- ইএসডিও আয়োজিত “স্বাস্থ্য ও পরিবেশে ক্ষতিকর পারদ অ্যামালগামের প্রভাব” শীর্ষক কর্মশালায় দাঁতের চিকিৎসায় পারদ অ্যামালগাম ব্যবহারের ঝুঁকি তুলে ধরে এর ব্যবহার বন্ধের আহ্বান জানান বক্তারা। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) ঢাকার পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিবেশ ভবনের অডিটোরিয়ামে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
মিনামাটা কনভেনশন অন মারকিউরির ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. এ কে এম রফিকুজ্জামান আহাম্মেদের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইএসডিও’র চেয়ারপারসন সৈয়দ মারগুব মুরশেদ। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. এসএম মুনজুরুল হান্নান খান, বাংলাদেশ আর্মড ফোর্সেসের মেডিক্যাল সার্ভিসের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ডা. গোলাম মহিউদ্দিন চৌধুরী। এছাড়া সম্মানিত অতিথি হিসেবে বিডিএস’র মহাসচিব ড. হুমায়ুন কবির বুলবুল, পরিবেশ অধিদপ্তরের এমআইএ প্রকল্পের পরিচালক মাসুদ ইকবাক, ইএসডিও’র মহাসচিব মো. শামীম, ড. শাহরিয়ার হোসেন, নির্বাহী পরিচালক সিদ্দিকা সুলতানা ও বিডিএস’র কার্যকরি সদস্য ও দন্ত চিকিৎসকরা কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন।
ইএসডিও’র চেয়ারপারসন সৈয়দ মারগুব মুরশেদ বলেন, মিনামাটা কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী হিসেবে সরকার দেশে দাঁতের চিকিৎসায় পারদ অ্যামালগামের ব্যবহার বন্ধে বিশেষ নজর দেবে।”
দাঁতে পারদ অ্যামালগাম বা সিলভার ফিলিং হলো দাঁত ক্ষয়ে গেলে তা ভরাট করতে এক বিশেষ চিকিৎসা পদ্ধতি যা মানুষের স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ব্যাপক ঝুঁকি তৈরি করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এর মতে জনস্বাস্থ্যে ১০টি বিশেষ ক্ষতিকারক পদার্থের মধ্যে পারদ একটি। দাঁতে সিলভার ফিলিং এর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফিলিং থেকে পারদ সবচেয়ে বেশি বিচ্যুত হয় যার ফলে রোগীর শরীরের কিডনি, শিশুদের মস্তিস্ক ও গর্ভবতী নারীদের মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
কর্মশালায় বিডিএস’র মহাসচিব ড. হুমায়ুন কবির বুলবুল বলেন, “দাঁতের পারদ অ্যামালগাম ২০২০ সালের মধ্যে নিষিদ্ধ করতে হবে। এর ব্যবহারের ফলে দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। দাঁতের চিকিৎসায় পারদ অ্যামালগামের ব্যবহার বন্ধে সচেতনতা বৃদ্ধিতে নাগরিক সমাজেরও এগিয়ে আসা উচিত।”
মেজর জেনারেল ডা. গোলাম মহিউদ্দিন চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, “পারদ শুধু আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যই ক্ষতিকর নয়, এটি আমাদের চারপাশের জন্যও ক্ষতিকর। অনেক দেশই ইতোমধ্যে পারদ অ্যামালগামের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে, যেখানে আমরা এখনও অনেক পিছিয়ে আছি। আমাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষার জন্য এই মুহুর্তেই দাঁতের চিকিৎসায় পারদের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা জরুরি।”